Summary
বাংলায় অভিধান শব্দের অর্থ শব্দার্থ এবং ইংরেজিতে इसे ডিকশনারি বলা হয়ে থাকে। এটি এমন একটি বই যেখানে একটি ভাষার শব্দগুলোর অর্থ, উচ্চারণ, ব্যুৎপত্তি এবং ব্যবহার বর্ণিত হয়ে থাকে। অভিধান বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, যেমন অনুবাদ শব্দকোষ, ব্যবহার নির্দেশক অভিধান এবং জীবনীর অভিধান। প্রথম অভিধান ১২২৫ সালে লাতিন ভাষায় রচিত হয়। ইংরেজিতে প্রথম অভিধান ১৫৫২ সালে রিচার্ড হুলোয়েট সৃষ্টি করেন। বাংলা ভাষায় প্রথম অভিধান ১৮১৭ সালে রামচন্দ্র বিদ্যাবাগীশ লিখেছিলেন, এর নাম ছিল বঙ্গ ভাষাভিধান।
বিশ শতকের শুরুতে আধুনিক বাংলা-বাংলা অভিধান প্রকাশ শুরু হয়। ১৯০৬ সালে সুবল মিত্রের সরল বাঙ্গালা অভিধান জনপ্রিয় হয়। ১৯৫৫ সালে বাংলা একাডেমী প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশে অভিধান চর্চায় নতুন মাত্রা যুক্ত হয় এবং বিভিন্ন ধরনের অভিধান প্রকাশ করা হয়। ২০০৯ সাল নাগাদ বাংলা একাডেমী প্রায় সত্তরটি অভিধান প্রকাশ করেছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো আঞ্চলিক ভাষার অভিধান, সংক্ষিপ্ত বাংলা অভিধান ও মধ্যযুগের বাংলা ভাষার অভিধান।
ব্যুৎপত্তিগত দিক থেকে বাংলায় অভিধান শব্দের অর্থ শব্দার্থ। একে ইংরেজিতে বলে ডিকশনারি (Dictionary), যার অর্থ গৃহীত। মূলত অভিধান বা শব্দকোষ এক ধরনের বই, যাতে একটি নির্দিষ্ট ভাষার শব্দগুলোর অর্থ, উচ্চারণ, ব্যুৎপত্তি, ব্যবহার ইত্যাদি বর্ণিত, ব্যাখ্যায়িত ও শব্দগুলো বর্ণানুক্রমে তালিকাভুক্ত থাকে।
অভিধান বিভিন্ন রকমের হয়। কোনো অভিধানে শব্দের এক ভাষা থেকে অন্য ভাষায় অনুবাদ থাকে, কোনো অভিধানে কোন শব্দ কিভাবে ব্যবহার হবে সেটির বর্ণনা থাকে। আবার জীবনীর অভিধানে বিভিন্ন বিখ্যাত ব্যক্তির জীবনীর সংকলন থাকে, প্রযুক্তি সম্পর্কিত অভিধানে প্রযুক্তির সুনির্দিষ্ট বিভাগ সম্পর্কিত শব্দগুলোর অর্থ ও ব্যাখ্যা থাকে।
১২২৫ সালে লাতিন ভাষায় বিশ্বে প্রথম অভিধান লেখা হয়। এর সংকলক ছিলেন জন গারল্যান্ড। ইংরেজি ভাষায় প্রথম ইংরেজি অভিধান রচিত হয় ১৫৫২ সালে, যার সংকলক ছিলেন রিচার্ড হুলোয়েট। এই অভিধানে শব্দ সংখ্যা ছিল প্রায় ২৬ হাজার। এতে প্রথমে ইংরেজি শব্দের ইংরেজি অর্থ এবং পরে তার লাতিন প্রতিশব্দ ছিল। ১৮১৭ সালে বাংলা ভাষায় বাংলা থেকে বাংলা প্রথম অভিধান সংকলন করেন রামচন্দ্র বিদ্যাবাগীশ। তিনি এর নাম দেন বঙ্গ ভাষাভিধান।
বিশ শতকের সূচনা থেকে আধুনিক পদ্ধতির একভাষিক বাংলা-বাংলা অভিধান প্রকাশ পেতে শুরু করে। এক্ষেত্রে ১৯০৬ সালে কলকাতা থেকে প্রকাশিত সুবল মিত্রের সরল বাঙ্গালা অভিধান দীর্ঘকাল ব্যাপী জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে সমর্থ হয়।
১৯৫৫ সালে ঢাকায় বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলাদেশে অভিধান চর্চায় নতুন মাত্রা যোগ হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ প্রতিষ্ঠান একভাষিক, দ্বিভাষিক, বহুভাষিক, বিষয়ভিত্তিক এবং পারিভাষিক নানা ধরনের অভিধান ও শব্দকোষ প্রণয়ন ও প্রকাশ করে আসছে। অভিধান ও শব্দকোষ মিলে ২০০৯ সাল নাগাদ বাংলা একাডেমি প্রায় সত্তরটি অভিধান প্রকাশ করে। তার মধ্যে আঞ্চলিক ভাষার অভিধান (মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্, ১৯৬৫), সংক্ষিপ্ত বাংলা অভিধান (আহমদ শরীফ, ১৯৯২), সমকালীন বাংলা ভাষার অভিধান, দু-খন্ড (আবু ইসহাক, ১৯৯৩ ও ১৯৯৮), বানান অভিধান (জামিল চৌধুরী, ১৯৯৪),মধ্যযুগের বাংলা ভাষার অভিধান (মোহাম্মদ আবদুল কাইউম, ২০০৮) প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন
Read more
